রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ চলছে, সাময়িক সমস্যার জন্য দুঃখিত!

 

সৈয়ব আহমেদ সিয়াম

বিশ্ববিদ্যালয় মুক্ত জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র, নেতৃত্ব তৈরির উর্বর ভূমি। নেতৃত্ব তৈরি হয় লড়াইয়ের মাঠ থেকে। আর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাই নেতৃত্ব দেয় অধিকার আদায়ের সংগ্রামে, লড়াইয়ের ময়দানে।


কোটা বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। ক্লাস বর্জন করা হবে কী না, এই নিয়ে পরামর্শ চলছিলো জোরদার। ডিপার্টমেন্টের গ্রুপগুলোতে মিটিং করছে শিক্ষার্থীরা। আব্দুর রহমান বললো, "পনেরো বছর পড়াশোনা করেছি। পনেরো দিন ক্লাস না করলে কিচ্ছু হবে না। আমরা কোটা পুনর্বহাল প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করবো। কেউ ক্লাসে গেলে তাকে জাতির গাদ্দার হিসেবে সর্বাত্মক বয়কট করা হবে।" রাফি বললো, "এই লড়াই আমাদের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম। দাবী আদায় না হলে আমি পেট্রোল দিয়ে নিজেকে জ্বালিয়ে দিবো। তিলে তিলে মরার চেয়ে একবারে মরা ভালো।"


দাবী আদায়ের জন্য সাধারণ জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলার বিষয়টা কেমন জানি খারাপ লাগতেছিলো আমার। সিহাব বললো, "চবির ছাত্ররা কক্সবাজারের ট্রেন ব্লক করতে পারে। ওটাতে বিদেশি পর্যটকরাও থাকে। ওইটা ব্লক করলে ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া কভারেজ পাওয়া যাবে।" র‍্যান্ডম আলোচনা চলতেছে আরকি। রিফাত ভাই বললো, "ট্রেন আটকানো এখনি ঠিক হবে না। জনদূর্ভোগ আমাদের উদ্দেশ্য না। আর রেলওয়ে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাটল বন্ধ করে দিলে আমাদেরই লস।" 


প্রথম দিন যেদিন আমরা চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক ব্লক করলাম, আধা ঘন্টায় নাকি দশ কিলোমিটার জ্যাম হয়েছিলো। ত্রিশ মিনিটের অবরোধের মধ্যে সমন্বয়করা দক্ষ ট্রাফিকের মতো পাঁচটা অ্যাম্বুলেন্সকে pass করে দিয়েছে। কোনো অ্যাম্বুলেন্স আটকে গেলো কী না, সেটা দেখার জন্য আলাদা টিম ছিলো। সাধারণ মানুষের সাথে আমাদের শত্রুতা নাই। রিকশা-অটোতে হাজারো মানুষ আন্দোলন চলাকালে যানজটে আটকে যাচ্ছে। আপনাদের এভাবে কষ্ট দিতে আমাদেরও খারাপ লাগছে। কিন্তু, কী আর করার? বড় সমস্যার সমাধান করতে ছোট সমস্যাকে মেনে নিতে হচ্ছে। ক্ষমা করবেন দেশবাসী। বিনীত ক্ষমা প্রার্থনা করছি। রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ চলছে, সাময়িক সমস্যার জন্য দুঃখিত!


- সৈয়ব আহমেদ সিয়াম, শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন