দক্ষিণ এন্টার্কটিকার "রিপাবলিক অব জঙ্গল" এ ধর্ষণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি দেশটির স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় "জঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটি"র মেধাবী ছাত্রী টিয়াপাখিকে হেনস্তা করেছে কয়েকটা লেজকাটা শিয়াল। ক্যাম্পাসে "শিয়াল পার্টি" নামের আন্ডারগ্রাউন্ড সংগঠনটি নিয়মিতভাবেই রক্তপাত, মারামারি, পাখিটিজিং সহ সব রকমের অপকর্ম করে আসছে। ওদের বিরুদ্ধে আঙুল তোলার সাহস কারোরই নাই। তবে, টিয়াপাখির ঘটনার পর থেকে ময়না, চড়ুই, কুকুর, বিড়াল, বাঘ, ভাল্লুক সবাই ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
এক দফা, এক দাবি লেজকাটা ওই শিয়ালদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে, করতেই হবে। তবে, কেউই ক্যাম্পাসে "শিয়াল পার্টি"কে নিষিদ্ধের দাবী তোলার সাহস করছে না। ভার্সিটির প্রক্টর সাদা ভাল্লুক সাহেব পাখিদের নিরাপত্তার স্বার্থে সন্ধ্যার মধ্যে খাঁচায় ঢোকার ফরমান জারি করলেন।
একজন নিরীহ বিড়াল হিসেবে ভাজা মাছ উল্টে খেতে খেতে আমিও প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নিলাম। ভাবলাম সব কিচিরমিচির, হুক্কাহুয়া একাকার হয়ে শিয়ালদের একটা ব্যবস্থা হবে। কিন্তু, কোথায় কী? এদিকে সব শিয়ালরা টিয়াপাখিকে মামলা তুলে নিতে ফোর্স করতেছে। ওদিকে আন্দোলনটা শিয়ালবিরোধী আন্দোলন না থেকে এন্টার্কটিকার সাদা ভাল্লুক বিরোধী আন্দোলনে রূপ নিলো। মূল কথা ভুলে গিয়ে সবাই প্রক্টর সাদা ভাল্লুক সাহেবের পদত্যাগের স্লোগান জুড়ে দিলো।
প্রগতিশীল ছাত্রনেতা মি. কুত্তা দ্য ডগ বললেন, "পাখিদেরকে খাঁচায় বন্দী করতে চাওয়ার মানসিকতার কারণেই আজ আমরা এই অবস্থার মুখোমুখি। ধর্মান্ধতাই এই সবকিছুর মূল। ধর্মান্ধ পাতাখোর সংগঠন ছাগল ফোরামের অপতৎপরতা বন্ধ করতে না পারলে আমরা কোনো দিনই এসব সমস্যার সমাধান পাবো না। কিচিরমিচির করে ওঠো হে পাখিরা। ঘেউ ঘেউ।"
নিরীহ বিড়াল সমিতির সদস্য হিসেবে আমি আরো মনোযোগ সহকারে আমার ভাজা মাছটা উল্টে খেতে থাকলাম। আর ভাবতে লাগলাম, "আচ্ছা, শিয়ালের বিচার না করে ছাগল আর সাদা ভাল্লুকের সাথে ক্ল্যাশে জড়াচ্ছি কেন আমরা?" ওদিকে এখনো টিয়াপাখিকে মামলা তুলে নিতে ফোর্স করা হচ্ছে। আর এদিকে স্লোগান বাদ দিয়ে পাখিদের আক্রমণ করা দু-একটা শিয়াল-কুত্তার মাথা ফাটিয়ে দম নিবো কী না... তা ভাবতে ভাবতেই আমার ভাজা মাছগুলো শেষ হয়ে যাচ্ছে।
গল্প: "টক অব দ্য জঙ্গল"
- সৈয়ব আহমেদ সিয়াম

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন